প্রখ্যাত ইরানি পরিচালক মোহাম্মদ রাসুলফকে আট বছরের কারাণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। সেই সাথে পরিচালককে চাবুক মারা ও তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। গতকাল নির্মাতার আইনজীবী বাবাক পাকনিয়া এক্সে এক পোস্টে এ তথ্য জানান।

সিনেমায় নিজ দেশ ইরানের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি তুলে আনার কারণে কয়েকবার কারাভোগ করতে হয়েছে বিশ্বজুড়ে পরিচিত অন্যতম আলোচিত নির্মাতা মোহাম্মদ রাসুলফকে।

২০২২ সালে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আবাদানে ভবন ধসে অন্তত ২৯ জন নিহত হওয়ায় বিক্ষোভের মধ্যে ‘আপনার বন্দুক নামিয়ে দেওয়ার’ অনুরোধ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। সেই বিবৃতিতে রাসুলফ, অন্য শিল্পীসহ নানা পেশার মানুষ সই করেছিলেন।

বাবাক পাকনিয়া বলেন, ‘রাসুলফ ইরানের জনগণের পক্ষে বিবৃতিতে সই করার কারণে এই রায় দেওয়া হয়েছে।’ এই বিবৃতি ও টুইট ‘জাতীয় সুরক্ষার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
৫১ বছর বয়সী রাসুলফ ইরানের এখনকার প্রধান নির্মাতাদের অন্যতম। এবারের কান উৎসবের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে জায়গা করে নিয়েছে তাঁর নতুন সিনেমা ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’। এই সিনেমায় ইরানের বিচারব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন রাসুলফ।

আইনজীবী বাবাক পাকনিয়া গত ৩০ এপ্রিল বলেছিলেন, ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ সিনেমা নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত কলাকুশলীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কান উৎসব থেকে সিনেমাটি প্রত্যাহার করে নিতে তাদের ওপর চাপও সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি জানান, গত কয়েক সপ্তাহে সিনেমার বেশ কিছু কলাকুশলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভিনয়শিল্পীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে ‘দেয়ার ইজ নো এভিল’ সিনেমার জন্য বার্লিন উৎসবের সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বর্ণভালুক জয় করেন রাসুলফ। ২০২২ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ইরানে বিক্ষোভ শুরু হলে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে মুক্তি দেয় সরকার। আগামী ১৪ মে দক্ষিণ ফ্রান্সে শুরু হতে যাওয়া চলচ্চিত্র উৎসবে রাসুলফ যোগ দিতে পারবেন কিনা– এই নিয়ে আগেই সন্দিহান ছিলেন আইনজীবী। এরই মধ্যে তাঁর কারাদণ্ড হলো।